[নিবন্ধনের লিংক] [কোর্সের মূল পাতা]
স্যাস কি জিনিস?
উপাত্ত (data) নিয়ে পরিসংখ্যানের গবেষণার জন্য স্যাস (SAS / সাস) একটি নামকরা সফটওয়্যার। স্যাস ইন্সটিটিউট ১৯৭১ সালে প্রথম স্যাস ৭১ প্রকাশ করে, যদিও স্যাস ৭৬ প্রথম পরিপূর্ণ ভার্সন বলে দাবী করা হয়। সেভাবে চিন্তা করলে স্যাসের বয়স প্রায় বাংলাদেশের সমান। পরবর্তীতে বিভিন্ন সিরিজে (৪,৬,৭,৮,৯) স্যাস প্রকাশিত হয়। মোটা-দাগে স্যাস একটি চতুর্থ প্রজন্মের প্রোগ্রামিং ভাষা যা দ্বারা নিম্নবর্ণিত কাজগুলো করা যায়:
– উপাত্ত তদারকি
– ছবি ও সংখ্যার মাধ্যমে রিপোর্ট তৈরি
– ব্যবসায়ী, গাণিতিক ও পরিসংখ্যান গবেষণা
বেইজ স্যাস কি?
বেইজ (Base) স্যাস স্যাসের প্রাথমিক ভিত্তি। এর উপরে বিভিন্ন মডিউল সংযোজন করা সম্ভব। যেমন স্যাস/STAT (পরিসংখ্যান মডিউল), স্যাস/GRAPH (ছবির মডিউল), স্যাস/IML (ইন্টার্যাক্টিভ ম্যাট্রিক্স মডিউল), স্যাস/ETS (একনোমেট্রিক মডিউল), ইত্যাদি।
স্যাস পাবো কোথায়?
স্যাসের ক্লাউড-বেইজড ভার্সনকে বলা হয় স্যাস অন-ডিমান্ড (SAS® OnDemand)। এটি একাডেমিকদের (শিক্ষণ ও গবেষণা) জন্য ফ্রি। আজই নাম লিখিয়ে ফেলুন। খুঁটিনাটি জানতে দেখুন শিক্ষণ ও গবেষণা লিঙ্ক। আপনার কার্যক্ষেত্রের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যাস লোকাল বা সার্ভার লাইসেন্স থাকলে সেই তথ্য জোগাড় করে নিন।
স্যাস কি বিনামূল্যে পাওয়া যায়?
লোকাল স্যাস ভার্সন ফ্রি নয়। এমনকি আমার জানামতে স্যাসের ‘লিগাল’ ট্রায়াল ভার্সন নেই যা ওয়েব/টরেন্ট থেকে ডাউন-লোড করা যায়। স্যাস কেনার জন্য বা ট্রায়াল ব্যাবহারের জন্য বাংলাদেশের জন্য স্যাস কন্টাক্ট-এর সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন। বেশ স্বনামধন্য হলেও এর অগ্নিমূল্যের কারণে অনেকে ব্যক্তিগতভাবে স্যাস ব্যাবহার থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকেন।
কিছু বিমুক্ত পরিসংখ্যানের সফটওয়্যার পাওয়া যায় – তাহলে এত দামী সফটওয়্যার ব্যবহার করব কেন?
বড় মাপের উপাত্ত নাড়াচাড়া করতে পারার ক্ষমতার কারণে শিল্পালয়ে বা কর্পোরেট ভাবে স্যাস বেশ জনপ্রিয়। যার কারণে, ব্যবসা, যে কোন পরিমাণগত গবেষণা বা পরিসংখ্যান বিষয়ক চাকুরী খোঁজার সময় কায়দা করে আপনার সিভিতে ‘স্যাসে কাজ করতে জানি’ লিখতে পারাটি একটি কার্যকরী গুন। তাছাড়া, অন্যান্য সফটওয়্যার তৈরির সময় ডেভেলপাররা স্যাস কিভাবে কাজ করে তা মাথায় রাখেন এবং অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করেন। সেভাবে চিন্তা করলে স্যাস এক অর্থে ‘প্রায়’ সব পরিসংখ্যানের গবেষণার সফটওয়্যারের পথিকৃৎ। এছাড়াও World Programming System (WPS) সফটওয়্যারটিও স্যাস ভাষা ব্যবহার করে। স্যাসের একাধিক সক্রিয় ব্যবহারকারী গোষ্ঠী আছে যারা একে অপরকে ক্রমাগত সাহায্য করে আসছেন। এই গোষ্ঠীগুলো নিয়মিত কনফারেন্স করেন, গবেষণা সাময়িকী প্রকাশ করেন।
স্যাস শিখবো কিভাবে?
মেনু চালিত না এমন সব সফটওয়্যার নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরণের ভীতি কাজ করে। বিশেষ করে কমান্ড ভাষা দিয়ে প্রোগ্রামিং করার পূর্ব-অভিজ্ঞতা যাদের নেই, তাদের জন্য এটি একটি ছমছমে অনুভূতির জন্ম দেয়। এই উদ্বেগ ও শঙ্কা কমানোর জন্য এই কোর্স। এই ছোট কোর্সটিতে আমরা শিখবো কিভাবে ছোট ছোট প্রোগ্রাম লিখে লিখে স্যাসের থেকে বিভিন্ন পারি-সাংখ্যিক ফলাফল পাওয়া সম্ভব। তবে এই কোর্সটি শুধুই হাতেখড়ির কাজে লাগবে। একবার প্রাথমিক ভীতি কেটে গেলে বিভিন্ন স্যাস বিষয়ক আন্তর্জালিক সূত্র ও বই পড়ে স্যাসে কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া সহজসাধ্য হবে।
এই কোর্স করে লাভ কি? সার্টিফিকেট মিলবে?
ব্যক্তিগতভাবে বা নিজে নিজে স্যাস শিখতে হলে এই কোর্স আপনাকে প্রাথমিক কিছু ধারণা পেতে সাহায্য করবে। আশা করি প্রতি পর্বে স্বয়ংক্রিয় কুইজ থাকবে বা ‘এসো নিজে করি’ অংশ থাকবে, যা নিজেকে যাচাই করতে সাহায্য করবে। প্রফেশনাল সার্টিফিকেট পেতে হলে স্যাস সার্টিফিকেশন প্রোগ্রামের খুঁটিনাটি পাবেন এইখানে।
স্যাসের কোন ভার্সন লাগবে?
এই কোর্সের জন্য স্যাস ৬-ই যথেষ্ট। সমসাময়িক স্যাস ভার্সন ৯.৩। বেইজ স্যাসের কমান্ডের সাপেক্ষে পার্থক্য খুবই সামান্য।
ভিডিও লেকচার: আমার ইউটিউবের চ্যানেলের মাধ্যমে এইখানে ভিডিও অনুবিদ্ধ করলাম, আগ্রহীরা গ্রাহকশ্রেণিভুক্ত হতে পারেন।
আপনার অঞ্চলে ইউটিউব অবরুদ্ধ থাকলে সাথে দিলাম স্ক্রিনকাস্ট মিরর আর ভিডিও ডাউন-লোড (১২৪.৬৮ মেগা) লিঙ্ক। সাথে ড্রপবক্স মিরর। সর্বশেষে আমার ওয়েবসাইটে মিরর।
লেকচার সারসংক্ষেপ:
সম্পূর্ণ ভিডিও দেখার পরে সারসংক্ষেপ দেখুন। নীচে বর্ণিত আলোচনাটি ভিডিওর অবিকল অনুলিখন নয়, সারসংক্ষেপ মাত্র। সম্পূর্ণ ভিডিও লেকচার না দেখলে সারসংক্ষেপ আলোচনা বুঝতে অসুবিধা হতে পারে।
স্যাস উইন্ডো:
– এক্সপ্লোরার উইন্ডো: বিভিন্ন ফাইল বা উপাত্ত পরিভ্রাজন করা যায়।
– রেজাল্ট উইন্ডো: সকল ফলাফলের লিঙ্ক।
– লগ উইন্ডো: সকল প্রোগ্রাম ও কার্যকলাপের বিবরণ। কোন ভুল হলে তা এইখান থেকে দেখা যায়।
– আউটপুট উইন্ডো: সকল ফলাফলের বিস্তারিত।
– এডিটর উইন্ডো: এইখানে স্যাস প্রোগ্রাম লিখা হয়। প্রোগ্রামের বিভিন্ন অংশ বুঝাতে স্যাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে রং আলাদা করে দেখায়।
স্যাস প্রোগ্রাম: স্যাস প্রোগ্রাম লিখতে কতগুলো স্যাস বিবরণ (statement) ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি স্যাস বিবরণ শেষ হয় একটি সেমিকোলন দিয়ে। একাধিক লাইনে স্যাস বিবরণ লিখা যেতে পারে। যতক্ষণ না আপনি সেমিকোলন দেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি একটি মাত্র স্যাস বিবরণ হিসেবে গণ্য হবে।
স্যাস প্রোগ্রামের দুটি অংশ: প্রথম অংশটি ডাটা (Data) অংশ; যেখানে উপাত্ত সংযোজন ও পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী অংশটি হল প্রক (Proc/procedure) অংশ, যা বিভিন্ন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ উপাত্তের উপর প্রয়োগ করতে পারে।
এক লাইনে মন্তব্য (comment) করতে হলে লাইনের শুরুতে * দিন। একাধিক লাইন মন্তব্য লিখতে শুরু করুন /* দিয়ে এবং শেষ করুন */ দিয়ে।
লিখিত প্রোগ্রাম স্যাসে নিবেদন করবেন SUBMIT বাটনে ক্লিক করে। লগ এবং রেজাল্ট উইন্ডো খেয়াল করুন। স্যাস এন্টারপ্রাইজ এডিসনের জন্য RUN বাটনে ক্লিক করতে হয়।
স্যাসে উপাত্ত পরিবেশন: স্যাসে উপাত্ত পরিবেশন করা যায় টেবিলের মাধ্যমে। কলামে থাকে চলক (variable), এবং সারিতে থাকে পর্যবেক্ষণ (observation)। চলক দুই প্রকার। গুণবাচক (character) ও সংখ্যাবাচক (numeric)। হারিয়ে যাওয়া (missing) পর্যবেক্ষণকে .(period) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। চলকের নাম ৩২ অক্ষরে (character) হতে হয়। শুরুর অক্ষর সংখ্যা বা বিশেষ অক্ষর (%^&$#) হতে পারবে না।
উদাহরণ ১- স্যাস কি ক্যালকুলেটরের মতো হিসাব নিকাশ করতে পারে?
* Simple SAS program;
DATA Temperature;
Celsius = 30;
Fahrenheit = (9/5)*Celsius+32;
PROC PRINT DATA = Temperature;
RUN;
এই উদাহরণে প্রথম লাইনটি একটি মন্তব্য। চলকগুলো হচ্ছে Fahrenheit, Celsius। উপাত্তের নাম Temperature। মনে রাখবেন, অন্তত একবার RUN না লিখা পর্যন্ত আপনার প্রক অংশ শেষ হবে না।
এসো নিজে করি ১:
ধরা যাক আপনার ওজন ৯০ কেজি। পাউন্ড হিসেবে আপনার ওজন কত হবে? সূত্র মোতাবেক ১ কেজি = ২.২০৪৬২ পাউন্ড। উপরের উদাহরণ দেখে লিখে ফেলুন একটি স্যাস প্রোগ্রাম। আগের মতন সূত্র লিখবেন DATA অংশে আর উত্তর দেখবেন PROC PRINT-এর মাধ্যমে।
উদাহরণ ২ – স্যাস কি এক্সেলের মতন উপাত্ত সংরক্ষণ করতে পারে?
আসুন আমরা একটি স্যাস প্রোগ্রাম লিখি যেখানে চলকের নামগুলো আমরা ঠিক করে দেব। উদাহরণ হিসেবে আমরা উপরোক্ত উপাত্তটি ব্যবহার করব। এটি করতে হলে INPUT কমান্ড লাগে। উপাত্ত লিখতে হয় DATALINES কমান্ডের পরে। গুণবাচক চলকের পরে একটি $ চিহ্ন দিতে হয়। উপাত্ত অস্থায়ীভাবে সংরক্ষিত হয় WORK নামের একটি লাইব্রেরীতে।
/* Multiple Sclerosis (MS) data example.
Contains a missing value */
DATA MS;
INPUT id trt gender $ age rel1 rel2 rel3;
DATALINES;
1 1 M 29 1 1 1
2 0 M 20 1 0 1
3 1 F 39 0 0 0
4 0 M 19 1 1 1
5 1 M 28 1 0 0
6 0 F 33 0 0 1
7 1 M 20 1 1 0
8 0 M 29 1 0 1
9 1 F 18 0 0 .
;
PROC PRINT data = MS;
RUN;
পরবর্তী ‘উপাত্ত আমদানি’ পর্বে আমরা এই উদাহরণ নিয়ে আমরা আরও বিস্তারিত কাজ করব।
এসো নিজে করি ২:
উপরোক্ত ছবিতে আপনারা দেখছেন টেবিলের একটি শিরোনাম (title) আছে (MS data table), যা টেবিলের শোভা বর্ধন করছে। উপরে উল্লেখিত স্যাস প্রোগ্রাম SUBMIT করলে, টেবিলটি পাবেন ঠিকই, কিন্তু শিরোনাম ছাড়া। প্রদত্ত স্যাস কোড বা প্রোগ্রামের সাথে ‘আর কি যোগ করলে’ স্যাস আউটপুটে এই শিরোনামটি দেখানো যাবে? পরবর্তী পর্বে এই প্রশ্নের উত্তর আমি দেব, কিন্তু দেখুন তো একটু গুগুল করে, আপনি নিজে সেই প্রয়োজনীয় স্যাস বিবরণটি খুঁজে বের করতে পারেন কিনা?
আজ এ পর্যন্তই। প্রশ্ন থাকলে মন্তব্যের মাধ্যমে জানান; এইখানে অথবা পরবর্তী পর্বে জবাব দেয়ার চেষ্টা করব। তবে আপনার অন্য কোন কোর্সের বাড়ির কাজের সমাধান দেব না। আশা করি সাথে থাকবেন।
সূত্র:
উইকি পরিসংখ্যান ও সম্ভাবনা পরিভাষা
আগের লেকচারের লিঙ্ক:
2 pings
স্যাস পরিচিতি – লেকচার ২ – উপাত্ত আমদানি
এপ্রিল 2, 2013 at 11:47 পূর্বাহ্ন (UTC -6) Link to this comment
[…] [নিবন্ধনের লিংক] [কোর্সের মূল পাতা] [আগের পর্ব] […]
স্যাস পরিচিতি – লেকচার ৩ – উপাত্ত পরিবর্ধন ও প্রদর্শন
এপ্রিল 15, 2013 at 4:04 পূর্বাহ্ন (UTC -6) Link to this comment
[…] […]