«

»

সেপ্টে. 11

নিউরোবিজ্ঞান পরিচিতি – লেকচার ১: নিউরোবিজ্ঞানের হাতে খড়ি

[কোর্সের মূল পাতা | নিবন্ধনের লিংক]

নিউরোবিজ্ঞানের সরল পাঠ

মামুন রশিদ
পিএইচডি ক্যান্ডিডেট, ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স বিভাগ, টেক্সাস টেক বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ সায়েন্স কেন্দ্র, যুক্তরাষ্ট্র

লেকচারের প্রথম খন্ড এখানে:

 

 

নিউরো লেকচার ১ পর্ব ১

 

প্রশিক্ষণের ধরণ: অডিও ভিজুয়াল কোর্স যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ পেতে পারেন। সকল ভিডিও সিরিজ হিসাবে পাওয়া যাবে শিক্ষক.কম ওয়েবসাইটে।

মূল পাঠ্য ও রেফারেন্স: দ্য সোসাইটি ফর নিউরোসায়েন্স থেকে প্রকাশিত ব্রেইন ফ্যাক্টস এর ষষ্ঠ সংস্করণ অনুসারে আমি আমার কোর্সটি সাজিয়েছি। সকল তথ্য ও উপাত্ত উক্ত রেফারেন্স থেকে সংগ্রহ করা; এ ছাড়া অন্য কোন সূত্র থেকে উপাত্ত গ্রহণ করলে তা প্রয়োজন বোধে ভিডিও’র মধ্যে বলে দেওয়া হবে আগ্রহী পাঠকের জন্যে।

পরিভাষা:
যদিও আমার সব লেকচার বাংলায় হবে, আমি সায়েন্টেফিক নামগুলো যথাসম্ভব ইংরেজিতেই রাখতে চাই। এর কারণ দুইটি। প্রথমত: আমি নিজেই অনেক টার্মের বাংলা জানি না, কাজেই নিজে থেকে বাংলাকরণ করতে যাওয়ার মতো কঠিন কাজে হাত দিতে চাই না। দ্বিতীয়ত, ইংরেজী নাম ও তার বানান বলে দিলে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা গুগল বা উইকি তে সার্চ করে ওই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।

কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বিষয়ক বক্তব্যঃ
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রসারের জন্যে কিছু করার প্রচেষ্টা থেকে এই কোর্সটি আমি স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে তৈরী করেছি। এখানে কোন পক্ষের কোন ধরণের অর্থনৈতিক বা অন্য কোন স্বার্থ জড়িত নেই।

কোর্স ওভারভিউ এবং এই কোর্সে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা কি কি বিষয় জানতে পারবেন তার বিবরণ।

শিরোনাম থেকে বোঝা যাচ্ছে, এই কোর্সে আমি নিউরোবিজ্ঞানের কিছু প্রাথমিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। ধারাবাহিক ভাবে এই কোর্সের বিভিন্ন লেকচারে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে সেগুলো এখানে দেওয়া হলো।

সবার আগে চলুন জানতে চেষ্টা করি, কেন নিউরোবিজ্ঞান আমাদের জানা উচিৎ। এই প্রশ্নের উত্তর জানার সহজ উপায় হলো, নিউরোবিজ্ঞানীরা কী অনুসন্ধানে ব্যাস্ত থাকেন সেটা বোঝা।

নিউরোবিজ্ঞানীরা আমাদের দেহের অন্যতম প্রধান অঙ্গ ব্রেইনকে আরো ভালো করে বুঝতে চান। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হচ্ছে ব্রেইন, ব্রেইনের বিভিন্ন সেল, সেলের মধ্যে ও আন্ত:সেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাসায়নিক অণুর ভূমিকা ইত্যাদি সম্পর্কে। প্রাণিজগতে মানুষ যে সবার উপরে রাজত্ব করে তার মূলে কিন্তু মানুষের দেহের অন্য কোন অঙ্গ না, বরং ব্রেইন। দেহের অনুপাতে ব্রেইনের আকৃতি মানুষের সবচেয়ে বড়, অন্য যে কোন প্রাণীর তুলনায়। দেহকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্রেইন। এ জন্যে ব্রেইন ও এন্ডোক্রাইন সিস্টেম এক সুন্দর ছন্দবদ্ধ নিয়মের মধ্যে কাজ করে। আবার মানুষের ব্যক্তিত্বও কেমন হবে সেটা নির্ধারণ করে দেয় ব্রেইন। মানুষের আচরণ ও অভ্যাস, কিংবা কুঅভ্যাস এগুলোও কিন্তু ব্রেইন থেকে সংকেতের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। সর্বোপরি, ব্রেইনের বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসার জন্যে সবার আগে জানতে হবে অসুখগুলো ঘটে কীভাবে, আর কীভাবে তার প্রতিরোধ বা প্রতিকার করা সম্ভব। এ সবই কিন্তু নিউরোবিজ্ঞানের আলোচনার মধ্যে পড়ে।

নিউরন, নিউরোট্রান্সমিটার অণুসমূহ এবং আন্ত-নিউরোনীয় যোগাযোগ।

  • শরীরের প্রধান অংশ ব্রেইন ও তার বেসিক অ্যানাটমি
  • নিউরন: নিউরনের গঠন, কাজ
  • নিউরোট্রান্সমিটার অণুসমূহ: অ্যাসিটাইল কোলিন, অ্যামাইনো এসিড, সেরোটনিন, পেপটাইড, ট্রফিক ফ্যাক্টর, হরমোন, গ্যাস
  • ফার্স্ট ও সেকেন্ড মেসেঞ্জার। এদের বহন করা মেসেজ সেলের মধ্যে দিয়ে কীভাবে কোথায় যায়?

বয়েসের সাথে ব্রেইনের বিকাশ

  • নিউরন ছাড়াও ব্রেইনের অন্যান্য ধরণের সেল
  • নিউরনের জন্ম এবং ব্রেইনের মধ্যে জালিকার মতো বিস্তৃতি লাভ
  • কেন্দ্রীয় ও প্রান্তীয় নার্ভাস সিস্টেম
  • পরিকল্পিত মৃত্যুর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় নিউরনের ঝরে পড়া

অনুভূতি এবং অনুধাবন

  • দৃষ্টি
  • শ্রবণ
  • স্বাদ ও ঘ্রাণ
  • স্পর্শ ও ব্যথা

শিক্ষণ, স্মৃতিধারণ ও ভাষা

  • ব্রেইন কীভাবে স্মৃতিধারণ করে ও আগের স্মৃতিকে শিক্ষণের উপাদান হিসাবে ব্যবহার করে?
  • কী খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে, বুদ্ধি বাড়ে? টলার, স্মার্টার, শার্পার হওয়া যায়?
  • ভাষা ও ব্রেইন কর্তৃক ভাষা নিয়ন্ত্রণ
  • ওয়ারনিকের বাকজড়তা ও ব্রোকা’র বাকজড়তা
  • বধিরতা

অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নাডাচাড়া ও ব্রেইনের নিয়ন্ত্রন

  • পেশীর গঠন ও তার সাথে নিউরনের যোগসূত্র
  • পেশীর স্বয়ংক্রিয় নড়াচড়া বা রিফ্লেক্স
  • পেশীর নড়াচড়ায় ব্রেইনের নিয়ন্ত্রণ

ঘুম

  • ঘুম এক রহস্যের নাম
  • ঘুমের সময় ব্রেইনের জেগে থাকা
  • ঘুম বিষয়ক অসুখ
  • ঘুম কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়

মানসিক চাপ, চাপের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ

  • মানসিক চাপ
  • নিউরো-এন্ডোক্রিন সিস্টেম ও চাপের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া
  • দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ ও চাপীয় প্রতিক্রিয়া

বুড়িয়ে যাওয়া ও বার্ধক্যের সাথে মেধা ক্ষমতার পরিবর্তন

  • বুড়িয়ে যাওয়া
  • নিউরণের বুড়িয়ে যাওয়া
  • বুড়িয়ে যাওয়ার সাথে মেধাক্ষমতার পরিবর্তন

 

ব্রেইন ও নিউরনের কিছু অসুখ ও তার চিকিৎসা

  • আসক্তি
  • অ্যালঝেইমার্স ডিজিজ
  • অ্যামায়োট্রপিট ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস বা এএলএস
  • দুশ্চিন্তা
  • মনোনিবেশহীন অতি কর্মচাঞ্চল্য
  • অটিজম
  • বাইপোলার অসুখ
  • ব্রেইন টিউমার
  • ডাউন সিনড্রোম
  • পঠন অক্ষমতা
  • হানটিংটন্স ডিজিজ
  • গুরুতর বিষণ্নতা
  • মালটিপল স্ক্লেরোসিস
  • নিউরোন সংক্রান্ত এইডস
  • নিউরোলজিক্যাল আঘাত
  • ব্যাথা বা প্রদাহ
  • পারকিনসন্স ডিজিজ
  • সিজোফ্রেনিয়া
  • খিঁচুনি এবং মৃগিরোগ
  • স্ট্রোক

দ্বিতীয় খণ্ডঃ
বিভিন্ন অ্যানাটমিক্যাল টার্ম এর সাথে পরিচয় এবং কীভাবে সেগুলো সহজে মনে রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

দ্বিতীয় খণ্ডের লিঙ্ক:

নিউরো লেকচার ১ পর্ব ২

 

Reference and sources of images that I used in the lecture:

1. The Brain Facts, 6th edition, by the Society for Neuroscience.

2. Human anatomy 6th edition, Kent M. Van De Graaff, (c) The McGraw-Hill Companies, Inc.

Comments

comments

About the author

mamoonrashid

আমি ১৯৯৭ সালে ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৯৯ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করি। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হয়ে বি ফার্ম পাশ করি এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের বিপণন বিভাগে যোগ দিই। পরের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি বিভাগে ভর্তি হই এবং একই সঙ্গে চাকুরী বদল করে স্কয়্যার ফার্মাসিউটিক্যালস এর আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগে যোগ দিই। ২০০৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধে আমি কর্পোরেট থেকে অ্যাকাডেমিয়া জগতে সরে আসি এবং একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাসি বিভাগে শিক্ষক হিসাবে যোগ দিই। ২০০৮ সালের অগাস্ট মাসে আমি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে চলে আসি। আমার গবেষণার ক্ষেত্র হলো নিউরোসায়েন্স। মৃত্যুরত নিউরন কর্তৃক নিউরোলাইসিন নামক একটি এনজাইমের অতিরিক্ত উৎপাদন হলো আমার গবেষণার মূল বিষয়।

অনার্স পড়ার সময় আমি একটি ভারতীয় আইটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পূর্ণ বৃত্তি লাভ করি, যার মাধ্যমে তাদের ঢাকাস্থ ক্যাম্পাস থেকে আমি আইটি এর উপরে একটি তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করি। ওয়েবসাইট ডেভেলোপার ও প্রোগ্রামার হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি অনিয়মিত ভাবে কিছু বেতনভুক্ত কাজ করেছিলাম। তবে দীর্ঘদিন চর্চা থেকে দূরে থাকার কারণে আজ অনেক কিছুই ভুলে গেছি।

২০০৭ সালের জানুয়ারীতে জিআরই পরীক্ষা দিয়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করছি, তখন আমি লক্ষ্য করি যে, বাংলাদেশী তরুণদের জন্যে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা এবং টিউটোরিং ও সঠিক কাউন্সেলিং সেবা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এই তাড়না বোধ থেকেই কয়েকজন সমমনা বন্ধুকে নিয়ে আমি স্ব উদ্যোগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের নিয়ে সেমিনার ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি আন্দোলন শুরু করি। যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগ পর্যন্ত দেড় বছরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক স্টুডেন্ট ও শিক্ষককে আমি প্রত্যক্ষভাবে জিআরই পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি নিতে অথবা কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে উপকার করতে চেষ্টা করেছি। অনেকের কাছে জিআরই মামুন প্রতীকী নামে শুধু এ কারণেই আমি পরিচিত।

আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনার এক বড় অংশ জুড়ে ব্যক্তি মামুন রশিদ নয়, বরং আমার দেশের উচ্চশিক্ষিত তরুণ সমাজ। আমি স্বপ্ন দেখি একটি মানবহিতৈষী প্রকল্পের, যেখানে দেশের ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রফেশনাল ও একাডেমিক পর্যায়ের সবার মধ্যে একটি দৃঢ় নেটওয়ার্ক থাকবে এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সবাই নি:স্বার্থ ভাবে একে অন্যের উপকারে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের মেধাস্রোতে ভারত ও চীনাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকা আমার দরিদ্র মাতৃভূমির জন্যে একদিন কিছু একটা করতে পারবো এই সুখস্বপ্নই আমাকে প্রতি মুহূর্তে সামনে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেয়।

Leave a Reply