«

»

আগস্ট 28

যন্ত্রের ভাষায় কথা বলা (সি++) – পর্ব ১ – যন্ত্রের মতো চিন্তা করা

সবাইকে আবারও স্বাগত জানাচ্ছি “যন্ত্রের ভাষায় কথা বলা” কোর্সে।

নিবন্ধনের লিংক – দয়া করে এখানে ক্লিক করে কোর্সে নিবন্ধন করুন।

 

 কোর্স পরিচিতিতে আমরা জেনেছি যন্ত্রের ভাষায় কথা বলার উপকারিতা সম্পর্কে, আরও জেনেছি যে এই কোর্সে আমরা C++ প্রোগ্রামিং শিখবো অন্যান্য ভাষার মতো করেই। হাতে-কলমে প্রোগ্রামিং খুবই জরুরী এবং আমরা সেই অচিরেই সেই চর্চায় মনোনিবেশ করবো। তবে তার আগে প্রয়োজন কিছু মৌলিক ধারণা আত্মস্থ করা। সেই আলোকেই শুরু করা যাক প্রথম লেকচার। আজকে আমরা প্রোগ্রামিং শুরু করার পূর্বে মনে রাখা প্রয়োজন এমন কিছু ধারণার সাথে পরিচিত হবো।

 

 

[সংশোধনীঃ ভুলবশত প্রারম্ভিক পরিচিতির স্লাইডে “পর্ব ১” এবং এই পর্বের স্লাইডে “পর্ব ২” লেখা আছে ভিডিওতে। প্রথম দুইটি ভিডিওতে এই ত্রুটি মার্জনার অনুরোধ রইলো।]

 

প্রোগ্রামিং অনেকটা রূপকথার রাক্ষসের মতো একটা ব্যাপার। এর দেহ বিশাল, তর্জন-গর্জন বিকট, দাপট অপরিমেয়। তবে তাই বলে তাকে বধ করা খুব কঠিন নয়। রাক্ষসের প্রাণ যেমন তার দেহের বাইরে ছোট্ট ভ্রমরে, প্রোগ্রামিং জানবার চাবিকাঠি তেমনি কম্পিউটার বা যেকোনো রকম যন্ত্রপাতি থেকে অনেক দূরে। সূত্রটি খুব সহজ — জীবনের সকল চিন্তাকে গাণিতিক রূপ দিতে হবে। “ভালো”, “মন্দ”, “উহু”, “ও গো”, “প্রিয়”, ইত্যাদি আবছা আবেগের স্থানে নেই এখানে। ভালো-মন্দ নির্বিশেষে সব চিন্তাকেই সংখ্যার মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে। বাকিটা এই সংখ্যা সামলাতে পারার খেলা।

 

এই খেলায় পারদর্শী হওয়া খুব কষ্টের নয়। এর জন্য যেটুকু জ্ঞান ও বোধ প্রয়োজন, তা সবারই আছে। সহজ উদাহরণ হিসাবে একটি কুকুর পালন করার কথা ভাবুন। ধরুন আপনাকে দুই দিন বয়সী একটি কুকুরছানা দিয়ে বলা হলো তাকে পেলে বড় করতে। এই অবস্থায় কী চিন্তা ঘুরপাক খাবে আপনার মাথায়? কী কী মৌলিক শর্ত পূরণ করার পর আপনি কুকুরকে নিজের মন মতো প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন? এই সময়টুকুতে তার জন্য কী কী বন্দোবস্ত করতে হবে আপনাকে?

 

এই প্রশ্নগুলোর জবাবের মধ্যেই লুকিয়ে আছে প্রোগ্রামিং-এ হাত দেবার আগে জানা প্রয়োজন এমন কিছু শিক্ষা। ভিডিওতে বিশদ ব্যাখ্যা আছে, আপাতত অনুলিপিতে মূল অংশ তুলে দিচ্ছি।

 

১) কী ধরণের কুকুর চান? — আপনার কুকুরটি কি শিকারী, না কি নিঃসঙ্গতার মুহূর্তে একান্ত সহচর?

২) আগাম পরিকল্পনা — কুকুর ঘরে আনবার আগে তার থাকার ব্যবস্থা করেছেন কি?

৩) স্থান সংকুলান — আপনার ঘরে যেটুকু বাসযোগ্য জায়গা আছে তার তুলনায় বেশি কুকুরছানা আনেন নি তো?

৪) মৌলিক নির্দেশনা — আপনি কুকুরের সাথে সহজ ভাষায় কথা বলছেন, নাকি তাকে মেঘনাদবধ কাব্য পড়ে শোনাচ্ছেন?

৫) যৌক্তিক প্রত্যাশা — কুকুরের কাছ থেকে আপনি কম্পিউটার চালানোর মতো জটিল কিছু প্রত্যাশা করছেন না তো?

৬) কার্যপরিধি সম্পর্কে সচেতনতা — আপনি এবং আপনার কুকুর নিজের অধিকার এবং স্বত্বের সীমানা জানেন তো?

৭) ত্রুটিমুক্তি — কুকুরের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার আগেই আপনি তাকে জনারণ্যে উন্মুক্ত করে দেন নি তো?

৮) পরিচ্ছন্নতা — আপনার কুকুরের জৈবিক বর্জ্য নিয়মিত পরিষ্কার করছেন তো?

৯) প্রস্থানের পথ খোলা রাখা — অনেক সাধের কুকুর যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে সেটার বিহিত করার প্রস্তুতি আছে তো?

১০) শ্রমবিভাজন — কুকুরকে কোনো কাজ করতে বললে সেই আদেশ বুঝতে এবং পালন করতে প্রস্তুত তো?

 

এই মৌলিক প্রশ্নগুলোর জবাব না জেনে যেমন কুকুর পালন করা যায় না, তেমনি একই ধারার কিছু মৌলিক বিবেচ্য মাথায় না রেখে প্রোগ্রামিং-এও হাত দেওয়া যায় না।

 

আজ এটুকুই, পরের পর্ব থেকে … না, পরের পর্বেও আমরা কোড লিখবো না, তবে খুব কাছাকাছি চলে যাবো। ভালো থাকুন।

Comments

comments

About the author

ইশতিয়াক রউফ

তথ্যপ্রকৌশলী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত। শিক্ষাগত জীবনে ইলেক্ট্রিকাল (ব্যাচেলর্স -- লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি, মাস্টার্স -- ভার্জিনিয়া টেক) ও কম্পিউটার (মাস্টার্স -- ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা) বিজ্ঞানে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষিত। আগ্রহের বিষয়ঃ খেলাধূলা, ব্লগিং, আলস্য।

1 comment

  1. মুহাম্মদ আব্দুল করিম

    চমৎকার৷ লিখছেন ৷ আরও একটু সহজ হলে ভালো হতো

Leave a Reply