কোর্সের নাম: পরিবেশ বিজ্ঞান পরিচিতি
নিবন্ধনের লিংক: এই কোর্সটিতে নিবন্ধনের জন্য এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
প্রশিক্ষক – মোস্তফা কামাল
যোগাযোগঃ kamaluw@gmail.com
কোর্স পরিচিতি:
বাংলা উইকিপিডিয়ার পরিবেশের সংজ্ঞাটা দেওয়া আছে এভাবে “পরিবেশ বলতে কোনো ব্যবস্থার ওপর কার্যকর বাহ্যিক প্রভাবকসমূহের সমষ্টিকে বোঝায়। যেমন: চারপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু ও প্রভাব বিস্তারকারী অন্যান্য জীব ও জৈব উপাদান ইত্যাদির সামষ্টিক রূপই হলো পরিবেশ। পরিবেশের প্রতিটি উপাদানের দ্বারাই একজন ব্যক্তি বা প্রাণী বা জীব এমনকি উদ্ভিদ প্রভাবিত হয়ে থাকে। এই প্রভাবকসমূহের মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক এবং অপ্রাকৃতিক বা কৃত্রিম পারিপার্শ্বিক উপাদানসমূহ” । পরিবেশ বিজ্ঞান হচ্ছে সেই বিজ্ঞান, যেখানে মানুষ ও প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানগুলোর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় । পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই এর পরিবেশ পরিবর্তীত হচ্ছে। কোন এক সময় পৃথিবীতে অক্সিজেনের পরিমান ছিল ০% কালের পরিক্রমায় যেটা এখন ২১% ।
আমাদের চার পাশের পরিবেশ শুধু স্বাভাবিক কারনেই পরিবর্তীত হচ্ছে তা না আমরাও এজন্য সমান ভাবে দায়ী; যেমন: বিদ্যুত উপাদনে জন্য কয়লার ব্যাবহার, জ্বলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা ইত্যাদি। তাইতো, পরিবেশ বিজ্ঞানীদের গবেষনার প্রধান বিষয় বস্তু হলো পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানগুলোর উপর মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপের প্রভাব।
কোর্সটির উদ্যেশ্য:
আমি মনেকরি সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে মানুষের নৈতিক দ্বায়িত্ব এই পৃথিবীটা যেন সকলের জন্য (এখানে সকল বলতে শিধুমাত্র মানব জাতীকেই বুঝানো হচ্ছে না) বসবাস যোগ্য থাকে তা নিশ্চিত করা। তাই কোর্সের বিষয়গুলো এমন ভাবে নির্ধারন করা হয়েছে যাতে করে বিজ্ঞান, মানবিক, কলা ও ব্যবসায় প্রশাসন সহ সকল বিষয়ের অধ্যায়নরত মানুষ পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে সাধরান জ্ঞান অর্জন করতে পারে ও পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখতে পারে।
যাদেরকে লক্ষ্য করে পাঠ্যসূচি তৈরি করা হয়েছে?
এই কোর্সের পাঠ্যসূচি তৈরি করতে যা মানুষটির কাছ থেকে আমি সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরনা পেয়েছি তিনি হলেন University of California at Berkeley এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক Richard A. Muller এর কাছ থেকে। উনি সেখানে অনার্সে একটি কোর্স পড়ান যার নাম হচ্ছে Physics for future Presidents (What every world leader needs to know)। এই কোর্সটি হলো ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাস। কোর্সের নাম দেখে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে ঐ ক্লাসের সকল ছাত্র-ছাত্রী ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবে কি না ? উত্তরটা হচ্ছে হ্যাঁ; তবে সবাই হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না কিন্তু ইন্টেল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট বা NASA এর প্রেসিডেন্ট তো হতে পারবে। তাই ঐ সকল পদে থাকলে আপনাকে পদার্থ বিদ্যার যে বিষয় গুলো জেনে রাখা উচিত সেগুলোই পাঠ দান করা হয় ঐ কোর্সে।
ঠিক একই মনোভাব প্রযোজ্য “পরিবেশ বিজ্ঞান পরিচিতি” কোর্সটিতেও। স্কুল-কলেজের ছাত্রদেরকে ভবিষ্যতে পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে পড়া-লেখা ও গবেষনায় উৎসাহিত করা এই কোর্সের অন্যতম প্রধান লক্ষ হলেও সকল শ্রেনীর মানুষকে পরিবেশ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করাও জরুরি বলে আমি মনেকরি।
শিক্ষাদান পদ্ধতি:
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে যে অনলাইনে বসে ৪০-৫০ মিনিটের লেকচারে খুব সহজে মনোযোগ ধরে রাখা যায় না তাই আমি প্রতিটি ক্লাশের জন্য ১০-২০ মিনিটের একটি অডিও-ভিডিও লেকচার তৈরি করার চেষ্টা করব, যেখানে একটি বিষয়কে কোন ধরনের গানিতীক সমীকরন ব্যবহার না করে ছবি, গ্রাফ দিয়ে ব্যাখ্যা করা হবে। তবে দুই-একটি ক্ষেত্রে খুবই সাধারন হিসাব-নিকাশ চলে আসতে পারে। যেহেতু আমি নিজে এখনও পড়ছি তাই মাসে দুটির বেশি লেকচার দেওয়াটা সম্ভবপর নাও হতে পারে। তবে আমি চেষ্টা করব মাসে অন্তঃত পক্ষে দুটি ক্লাস নিতে। আপনি যদি এই কোর্সে নিবন্ধন করে থাকেন তাহলে নতুন ভিডিও আপলোড হওয়া মাত্রই আপনি মেইলের মাধ্যমে জেনে যাবেন। যেহেতু এই কোর্সের বিষয়গুলো একটির সাথে অন্যটি খুবই কম সম্পর্কযুক্ত তাই আপনি যে কোন লেকচার থেকে শুরু করতে পরবেন। প্রতিটি লেকচারের শেষে ৫-১০ টি প্রশ্নের একটি কুইজ থাকবে।কুইজের প্রশ্নগুলো মুখ্য উদ্দেশ্য হবে আপনি বিষয়টি কতটুকু বুঝতে পেরেছেন তা যাচাই করা। আপাতত ১৬ টি লেকচারের বিষয়বস্তু দেওয়া হল।যেহেতু আমাদের উদ্যেশ্য হলো মানুষকে বাংলা ভাষায় জ্ঞান দান করা সুতরাং পরবর্তীতে সময় ও সুযোগ পেলে আরও কিছু লেকচার যোগ করার ইচ্ছে রইল।আমার কোর্সটি শুরু হবে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
পাঠ্যসূচি:
১) পরিবেশ বিজ্ঞান পরিচিতি।পরিবেশের উপাদানগুলো কি কি? কেন পরিবেশ বিজ্ঞানের সাধারন বিষয়গুলো সকলের জেনে রাখা উচিত? পরিবেশ বিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনিয়তা ও কর্মক্ষেত্রগুলো।
২) বায়ুমন্ডলের স্তরগুলো কি কি? সেগুলো কোন কোন পদার্থ দ্বারা গঠিত? এগুলোর শতকরা পরিমান কি অপরিবর্তনীয়? বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তরগুলোর তাপমাত্রার তারতম্য হয় কেন হয়?
৩) গ্রীনহাউস গ্যাস গুলো কি কি? গ্রীনহাউস গ্যাস কিভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে? পৃথিবীর পরিবেশ-প্রতিবেশের উপর এর প্রভাব গুলো কি কি?
৪) পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ন্তরনের কৃত্রিম উপায়গুলো কি কি? জিওইঞ্জিনিয়ারিং কি ও কিভাবে এর দ্বারা পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব? জিওইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষতিকারক দিকগুলো কি কি?
৫) অন্তর্জাতিক গ্রীনহাউস গ্যাস ক্রয়-বিক্রয় বাজার কি ও কিভাবে আমাদের সুন্দরবন দ্বারা শোষিত গ্রীনহাউস গ্যাস সেখানে বিক্রয় করে ডলার অর্জন করা সম্ভব।
৬) পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের বৃষ্টিপাত ও খরার জন্য El-Nino ও La-Nina কে দায়ী করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বৃষ্টিপাতের উপর El-Nino ও La-Nina এর কোন প্রভাব রয়েছে কি না? বাৎসরিক বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস করা সম্ভব কি না? El-Nino ও La-Nina পূর্বাভাস কিভাবে আমাদের দেশের কৃষক ও কৃষিকাজ কে সাহায্য করতে পারে।
৭) পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ু ক্রমাগত পরিবর্তীত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়তেছে আমাদের চারপাশে অবস্হিত পরিবেশের উপাদানগুলোর উপর। পরিবেশের নিম্নোক্ত উপাদানগুলোর উপর কি প্রভাব ইতোঃমধ্যেই পড়েছে ও পড়তে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ক) পানিসম্পদের উপর প্রভাব
খ) কৃষি সম্পদের উপর প্রভাব
গ) মাৎস্য সম্পদের উপর প্রভাব
৮) বাঁচতে হলে জানতে হবে: বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র /জলাধার ভাটি অঞ্চলের জলজ সম্পদের উপর কোন ধরনের প্রভাব ফেলে? সাম্প্রতিক কালে পদ্মানদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায় না বলে জেলেরা অভিযোগ করে থাকেন। ফারাক্কা বাধের কারনে পদ্মা নদীর জলজ বাস্তু সংস্হানের কোন পরিবর্তন সাধিত হয়েছে কি না? টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে ভাটি অঞ্চল খ্যাত সুনামগন্জ, নেত্রকোনা, ও কিশোরগন্জ অঞ্চলের মাৎস্য সম্পদের কোন ধরনের পরিবর্তন সাধিত হতে পারে?
৯) বাঁচতে হলে জানতে হবে: বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র /জলাধার এর প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘটিত ছাট-বড় ভূমিকম্প ও প্রস্তাবিত টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারনে সংলগ্ন অঞ্চলে একই ধরনের ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা?
১০) কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে নির্গত বিভিন্ন দুষিত পদার্থ পরিবেশের উপর কেমন প্রভাব ফেলে? মানব স্বাস্হ্যের উপর সেগুলোর প্রভাব কেমন? প্রস্তাবিত বাগেরহাট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের মাৎস্য সম্পদের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে কি না?
১১) কৃষি ক্ষত্রে রাসায়নিক সারের ব্যবহারের কারনে পানির গুনগত মান প্রতিনিয়ত পরিবর্তীত হচ্ছে এর প্রভাব পড়তেছে মাৎস্য সম্পদের উপর। রাসারনিক সারের ব্যবহার কিভাবে নদী ও মোহনা অঞ্চলের জলজ সম্পদের উপর প্রভাব বিস্তার করে ও ফলাফল কি হয়?
১২) যে দিন থকে মানুষ কৃষি কাজ শিখলো সেদিন থেকে তারা ভূমির প্রাকৃতিক রুপ ধ্বংস করতে শুরু করল। বনভূমি কেটে শুরু করল চাষাবাস। ভূমির ব্যবহারের পরিবর্তনের ফলে আঞ্চলিক জলবায়ু ও ভূগর্ভস্হ পানির স্তরের কোন ধরনের পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত?
১৩) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কিভাবে পানি, বায়ু ও মাটির গুনগত মানের পরিবর্তন করে থাকে?
১৪) আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের সম্ভাব্য করনীয় ও আমরা যা করছি।
১৫) পৃথিবীর বিভিন্ন পর্বতমালা এক সময় ছিল না। হিমালয় পর্বতমালার উচ্চতা এখনও প্রতিবছর বাড়ছে তাই কোন এক সময় এভারেষ্ট পর্বতের বর্তমান উচ্চতা ৮৮৮৪ মিটার থাকবে না। কিভাবে হিমালয় ও আন্দিজ পর্বতমালার সৃষ্টি হল?
১৬) ভূমিকম্পের কাছে মানুষ এখনও অসহায়। প্রতিনিয়ত ভূমিকম্প হচ্ছে ভূ-অভ্যন্তরে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাষ করা আদৌ সম্ভব কি না ?
প্রশিক্ষক পরিচিতি:
বর্তমানে কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে Earth and environmental science এ Ph.D ডিগ্রীর জন্য গবেষনা করতেছি। আমার Ph.D গবেষনার বিষয় ভূমির ব্যাবহারের পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর কি পরিবর্তন সাধিত হয় তা নিয়ে।২০০৯ সালে ইউনেস্কো ও অন্তর্জাতিক পরমানু শক্তি সংস্হার (IAEA) একটা পূর্ন বৃত্তি নিয়ে ইটালির The Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics (ICTP) থেকে Earth System Physics এ এক বছরের Post Graduate Diploma সম্পন্ন করেছি। পদার্থ বিদ্যায় অনার্স (২০০৬) ও মাস্টার্স (২০০৮) ডিগ্রী অর্জন করেছি শাহ্ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
1 comment
1 ping
Mhel
অক্টোবর 17, 2012 at 12:59 অপরাহ্ন (UTC -5) Link to this comment
Finding this post has anwsreed my prayers
পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের উপর মানুষের প্রভাব
সেপ্টেম্বর 11, 2012 at 11:17 অপরাহ্ন (UTC -5) Link to this comment
[…] ১০১: লেকচারসমূহআইপি টেলিফোনীপরিবেশ বিজ্ঞান পরিচিতিতড়িৎকৌশল পরিচিতিফাইন্যান্স ১০১ – […]